৫ আগষ্ট পরবর্তী অনেকের স্বপ্ন ছিলো থানা পুলিশ এর সেবা সাধারণ জনগণের জন্যে নিবেদিত হবে কিন্তু একের পর পর সেসব থানায় ভুক্তভোগীদের কান্না জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। আগের তুলনায় সাধারণ জনগণের উপর ক্ষিপ্ত পুলিশ প্রশাসন।
মহেশখালী থানায় ৫ আগষ্ট পরবর্তী পুলিশের অফিসার পরিবর্তন হলেও আগের মতোই রয়ে গেছে থানা প্রশাসনের কার্যক্রম। কোন কোন সময় মূল অপরাধীদের আসামী না করে নিরীহ অনেক পঙ্গু ও অসহায়দের আসামী করে এরকম বিভিন্ন এমন অভিযোগ আগেও ছিলো এবং এখনও আছে বলে অভিযোগ অনেকের । থানায় সেবার চেয়ে ভুক্তভোগীদের কষ্টের গল্প অনেক আছে যা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে অনেক মানুষ। এমন অভিযোগও আছে অনেকের।
এক ভুক্তভোগী নারীকে নিয়ে মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসাইনের ফেসবুক স্ট্যাটাস হুবুহু তুলে ধরা হলোঃ
আজকে মহেশখালী থানায় গিয়ে একটি দিনের সাক্ষী হলাম। আমার এলাকার একজন ভদ্র মহিলা, যার স্বামী নেই, আজকে দুই বছর ধরে তাকে তার স্বামী ছেড়ে আরেকজনকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। সেই মেয়েটির বাবা নেই, এবং তার থাকার জন্য কোনো উপযুক্ত জায়গা নেই। তার মা বৃদ্ধ হয়ে গেছে, এবং মা তার খুব কষ্ট করে ভরণপোষণ দেয়। সে মেয়েটি সঠিক বিচার পাচ্ছে না কোথাও। কথায় আছে, বড় লোকের বিচার পাওয়া যায়, কিন্তু সব জায়গায় গরীবদের বিচার কোথাও পাওয়া যায় না। তাই হয়তো তার বিচার কেউ করে না। সে মেয়েটি এই দুই বছরে আমার জানা মতে প্রতিটি জায়গায় বিচার চেয়ে গেছে, কিন্তু কোথাও বিচার পাইনি।
যখন সে বিচার পাচ্ছিল না, তখন আইনের আশ্রয় নেয়, কিন্তু আইনের মানুষও তার তাকে একটু হেল্প করতে পাশে আসে নাই । সে মেয়েটি কোর্টে একটি মামলা করে, কিন্তু ভুল করে স্থায়ী ঠিকানা কক্সবাজার সদর থানায় দেয়। সদর থানায় মামলা ওয়ারেন্ট হয়ে যায়। সদর থানা থেকে মহেশখালী থানায় আনতে প্রসেসিংয়ের মধ্যে একটা ভুল হয়ে যায়, যার কারণে মহেশখালী থানায় সে মামলার ওয়ারেন্ট কপি আসে না। মেয়েটি আবার একটি করে সেটার P&A রিপোর্ট মহেশখালী থানায় পাঠায়, যেটা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করা যাবে। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে জানানো হয়। এটা নিয়ে আমি যখন কথা বলছিলাম, তখন এসআই হারুন ভাই আমাকে জানান যে উপরের অর্ডার পেলে তাকে গ্রেফতার করা যাবে। আমি আবার ওসি স্যারের কাছে কল দিলাম, স্যার হয়তো ব্যস্ত ছিলেন, তাই আমার কল রিসিভ করতে পারেননি। এরপর কল দিলাম সেকেন্ড অফিসারকে, কিন্তু কথা বলার পর আমি কোনো সাড়া পেলাম না। আমি পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সেই মেয়েটির কান্না দেখে নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। তারপর আমি আবার কল দিলাম ওসি স্যারের কাছে। কয়েকবার কল দেওয়ার পর স্যার কল রিসিভ করলেন। আমি সবকিছু খুলে বললাম। কথা বলার পর স্যার আমাকে বললেন, "যদি সদর থানায় ওয়ারেন্ট থাকে, তবে গ্রেফতার করবো।" আমি স্যারকে বললাম, "স্যার, এটার রিস্ক আমি নিলাম।" তার পর স্যার বললেন, "আগে খুঁজে দেখে নিন।" এরপর আমি সব তথ্য হাতে নিয়ে স্যারকে কল দিলাম, কিন্তু স্যারকে আর ফোনে পাওয়া গেল না। তখন আমি থানার দিকে রওনা দিলাম। গিয়ে সেকেন্ড অফিসারের সাথে কথা বললাম। তিনি আমাকে এসআই হারুনের সাথে কথা বলতে বললেন। আমি বললাম, "আমি ওনার সাথে কথা বলেছি, তিনি বলছেন উপরের কল না পেলে কিছু করতে পারবেন না।" আমি এটাও বললাম, "স্যার এর সাথে আমি কথা বলেছি, স্যার আমাকে বলছেন, যদি সদর থানার ওয়ারেন্ট কপি থাকে, তবে মেয়েটির পক্ষে কাজটা করে দেবেন।" কিন্তু সেকেন্ড অফিসার আমাকে বললেন, "আপনারা তাহলে কথা বলেন ওসি স্যারের সাথে বল," বলে আমাকে আর কিছু বলেননি। আমি বলছিলাম, "আপনারা দেখেন, মেয়েটা খুব অসহায়, তার পরেও ওনার থেকে কোনো ধরনের সহায়তা পাওয়া যায়নি।" তার পর এসপি স্যারের সাথে কথা বললে, এসপি স্যার আমাকে বললেন, "কথা বলছি," কিন্তু কিছু কাজ হয়নি। তারপর আবার ওসি স্যারের কাছে কল দিলাম, কয়েকবার কল দেওয়ার পর ওসি স্যার কল রিসিভ করলেন এবং আমাকে ওখানকার ডকুমেন্টস খুঁজতে বললেন। আমি ডকুমেন্টস দিলাম, কিন্তু তার কোনো ধরনের উত্তর পাওয়া গেল না এবং অসহায় মেয়েটি কিছু পেল না। হয়তো তার টাকা থাকলে আজকেও বিচার পেতেন 😭
সে মেয়েটির নাই কোনো টাকা পয়সা নাই কোনো সম্পদ যেটা দিয়ে সে বিচারক খুজবে।
এখন কিছু প্রশ্ন আপনাদের করলাম। যার নামে মামলা হয়েছে, তাকে কল দিয়ে কি কোনো ধরনের তথ্য খুঁজতে হয় এসআই এর থেকে? বিষয়টি আর বললাম না।
আগের মতো কি এখনো কাজ চলমান থানা কোর্টে? যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে কেন আমরা আন্দোলন করলাম কেন? মহেশখালী থানা বলেন বা উপজেলা পরিষদ এই দুই জায়গায় মানুষ এমনি এমনি যায় না এই দুই জায়গায় মানুষ যায় কোনো বড় সমস্যাই পড়লে কিন্তু দিন শেষে এই দুই জায়গায় তাদের নিরাশ করা হয়।
প্রতিনিয়ত মানুষের হয়রানির শিকার হতে হয়।
দিন শেষে বলতে হয় সংস্কার হওয়ার কথা ছিল, হয়তো জীবনেও সংস্কার হবেনা 🥲
0 মন্তব্যসমূহ