দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, মহেশখালী-কক্সবাজার রুটে পরীক্ষামূলক সি-ট্রাক চালু
- ৩৫ মিনিটে ৩০০ যাত্রী পারাপারের সক্ষমতা, দ্বীপবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ
- ১৬ বছর পর আলোর মুখ দেখল উদ্যোগ, উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রা
- যাত্রী দুর্ভোগ লাঘবে নতুন দিগন্ত, আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শীঘ্রই
- ড. সলিমুল্লাহ খান, মকবুল আহমেদ ও আবুল হাসেমের অবদানে খুশি স্থানীয়রা
এরফান হোছাইনঃ
অবশেষে কক্সবাজার ও দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মধ্যে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো সি-ট্রাক সার্ভিস। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় এই পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয়, যা এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ কিলোমিটারের সমুদ্র পথে মহেশখালীতে যাতায়াতের জন্য ফেরি সার্ভিস চালুর দাবি দীর্ঘদিনের। গত বছরের ৫ আগস্টের পর স্থানীয় ছাত্র-জনতার জোরালো দাবির প্রেক্ষিতে এই সি-ট্রাক সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। স্থানীয়দের ভাষ্য, দীর্ঘ ১৬ বছরের বিভিন্ন সরকারের আমলে মহেশখালী ঘাটে পল্টুন স্থাপনসহ যাত্রীসেবার উন্নয়নের চেষ্টা করা হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে, ড. সলিমুল্লাহ খান ও মহেশখালী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মকবুল আহমেদের মতো স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলের উন্নয়নে নীরবে কাজ করে গেছেন।
জানা যায়, সাবেক অধ্যক্ষ ও উন্নয়নকর্মী মকবুল আহমেদ ড. সলিমুল্লাহ খানের সুপারিশ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করলে, তারই ফলস্বরূপ মহেশখালী-কক্সবাজার ঘাটের জন্য সি-ট্র্যাক এবং মহেশখালী ঘাটের জন্য পল্টুন স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।
উপসচিব আবুল হাসেম, যিনি মহেশখালীর সন্তান, জানিয়েছেন যে মকবুল আহমেদ একটি আবেদন করেছিলেন, যা অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান সুপারিশ করেছিলেন। তবে, এই আবেদনটি সি-ট্র্যাক বা পল্টুন বিষয়ক ছিল না। তিনি আরও জানান, দফায় দফায় আলোচনার মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ-এর চেয়ারম্যানকে রাজি করিয়ে কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে, যা আজ দৃশ্যমান হয়েছে। তার মতে, মকবুল আহমেদ গত এক মাসে এই বিষয়ে কিছুই অবগত ছিলেন না। এই ভালো কাজটি সম্পন্ন হওয়ায় তিনি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মহেশখালীর বাসিন্দা ও রবি'র সিনিয়র কর্মকর্তা ফরহাদ হোছাইন এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে সি-ট্রাক মহেশখালী জেটি ঘাটে ভিড়েছে এবং পল্টুন স্থাপন করা হয়েছে। মহেশখালীর মানুষের উচ্ছ্বাস দেখে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত এবং জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে সম্মিলিতভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম আরিফ উদ্দিন জানান, আজ থেকে কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে পরীক্ষামূলক সি-ট্রাক চালু হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হবে। এই সি-ট্রাকে প্রতিবার প্রায় ৩০০ যাত্রী পারাপার করা সম্ভব হবে, যা এই রুটে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘব করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ