অবৈধ দখল উচ্ছেদে অবরোধ, কলাতলীতে কউকের উচ্ছেদ অভিযান
এরফান হোছাইনঃ
//২২ বছরের বেদখলীয় সম্পত্তি উদ্ধারে বাধা, সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
//বিএনপি নেত্রীর নেতৃত্বে স্থানীয়দের প্রতিরোধ, পর্যটকদের ভোগান্তি
//মালিকানা না থাকায় নোটিশ ছাড়াই অভিযান, কউকের সাফাই
এরফান হোছাইন, কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজার পৌরসভার কলাতলীতে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে বেদখলে থাকা সরকারি সম্পত্তি কলাতলী বাজার পুনরুদ্ধারের জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) উচ্ছেদ অভিযান স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে এই অভিযান শুরু হলে, অবৈধ দখলদার ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
অভিযানকালে র্যাব, বিজিবি, আনসার ও পুলিশসহ বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থী প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি সহ অনেকেই দীর্ঘ দুই দশক ধরে সরকারি এই জমি দখল করে রেখেছেন এবং ভুয়া মালিকানা দেখিয়ে বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভাড়া আদায় করছেন। উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও জমির ভুয়া মালিকানা দাবিদাররা কলাতলী পর্যটন এলাকার প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন, যার ফলে পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হন। এমনকি, কিছু ভাড়াটে লোক এসে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে পর্যটকদের গাড়ি আটকে রেখে হয়রানি করে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বিএনপি নেত্রী নাসিমা আকতার বকুল উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দিয়ে বলেন, কোনো প্রকার পূর্ব নোটিশ ছাড়াই ব্যবসায়ীদের দোকানপাট ভাঙচুর করলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যারা সালামী দিয়ে দোকান নিয়েছেন, তাদের টাকা ফেরত না দিয়ে উচ্ছেদ করা অমানবিক। তিনি কউকের অভিযানিক দলকে এই কার্যক্রম বন্ধ করার অনুরোধ জানান। তবে, অভিযানিক দলের সদস্যরা জানান, কউক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের নির্দেশ ছাড়া অভিযান বন্ধ করা সম্ভব নয় এবং তারা এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন উক্ত নেত্রী বকুলকে এবং আলাপ শেষ হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী বাকি উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ রাখার আশ্বাস দেন।
দুপুর একটার দিকে আন্দোলনরত ব্যবসায়ীরা রাস্তা অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
বিনা নোটিশে কেন এই অভিযান চালানো হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে কউকের কর্মকর্তারা জানান, উচ্ছেদকৃত জমির কোনো বৈধ মালিকানা নেই। এটি সরকারি সম্পত্তি এবং প্রকৃত মালিক না পাওয়ায় কাউকে নোটিশ দেওয়া সম্ভব হয়নি। কউকের এই সাফাই স্থানীয়দের মধ্যে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পায়, তা দেখার বিষয়। তবে, আকস্মিক এই উচ্ছেদ অভিযানে পর্যটন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং বহু ব্যবসায়ী তাদের জীবিকা হারানোর আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।
0 মন্তব্যসমূহ