ধলঘাটার জীবন-জীবিকা রক্ষায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মানববন্ধন

 


ধলঘাটার জীবন-জীবিকা রক্ষায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মানববন্ধন, বন্দর কর্তৃপক্ষের ভূমি অধিগ্রহণ পরিকল্পনার প্রতিবাদ

/গভীর সমুদ্র বন্দরের সম্প্রসারণে ভিটেমাটি হারানোর শঙ্কায় স্থানীয়রা
/ঐতিহ্যবাহী জনপদ, ফসলি জমি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার আহ্বান
/"ধলঘাটা রক্ষা আন্দোলন" এর ব্যানারে সোচ্চার এলাকাবাসী

এরফান হোছাইন:
মহেশখালী উপজেলার ধলঘাটা ইউনিয়নে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও দেশি-বিদেশি কোম্পানির নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে স্থানীয় জনগণ। তাদের জীবন-জীবিকা, সামাজিক ও মানবিক মর্যাদা, অধিকার, স্বাধীনতা, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জনপদ, বাস্তুভিটা, ফসলী জমি, জীববৈচিত্র্য, নদী, প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং অনাগত প্রজন্মের ভবিষ্যৎ রক্ষায় "ধলঘাটা রক্ষা আন্দোলন"-এর উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে গত শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকালে  এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ধলঘাটার বিপুল সংখ্যক মানুষ তাদের ancestral ভিটেমাটি ও জীবিকার উৎস থেকে উচ্ছেদ হবে। এই অঞ্চলের কৃষি জমি, যা তাদের জীবন ধারণের প্রধান অবলম্বন, তা কেড়ে নেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, এখানকার সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক পরিবেশও হুমকির মুখে পড়বে। বক্তারা আরও বলেন, এই জনপদ শত শত বছরের ঐতিহ্য ধারণ করে আছে এবং এই উন্নয়ন প্রকল্পের নামে তাদের বাস্তুভিটা কেড়ে নিলে তাদের সামাজিক ও মানবিক মর্যাদা চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হবে।
"ধলঘাটা রক্ষা আন্দোলন"-এর ব্যানারে সমবেত স্থানীয়রা #RighttoLand, #ভূমিরক্ষা ও #ভূমিরঅধিকার স্লোগান তুলে ধরেন। তারা বলেন, উন্নয়নের নামে জনগণের অধিকার ও জীবন কেড়ে নেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। গভীর সমুদ্র বন্দরের সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা তারা উপলব্ধি করেন, তবে তা স্থানীয় জনগণের জীবন ও জীবিকার মূল্যের বিনিময়ে হতে পারে না। তারা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণের এবং স্থানীয় জনগণের মতামত ও স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানান।



উল্লেখ্য, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর একটি মেগা প্রকল্প যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, এর সম্প্রসারণের জন্য নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। এর আগেও এই প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের সময় স্থানীয়রা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমতাবস্থায়, "ধলঘাটা রক্ষা আন্দোলন"-এর এই প্রতিবাদ কর্মসূচি স্থানীয়দের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ এবং তাদের ন্যায্য অধিকারের প্রতি আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণের একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ