নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের বান্দরবানের দেবতাখুম, যেভাবে যাবেন

 

নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের বান্দরবানের দেবতাখুম, যেভাবে যাবেন

এরফান হোছাইন:

বাংলাদেশের নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি বান্দরবান। পাহাড়, নদী আর সবুজের এক অপূর্ব মেলবন্ধন এই জেলা। আর বান্দরবানের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে একটি হল দেবতাখুম। স্থানীয় মারমা ভাষায় 'খুম' মানে হল ঝিরি বা ছড়া। বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় শীলবাঁধা পাড়ায় অবস্থিত এই দেবতাখুম।

দেবতাখুমের প্রধান আকর্ষণ হল এর চারপাশের উঁচু পাহাড় আর শীতল জল। প্রায় ৫০-৭০ ফুট গভীর এই খুমের চারপাশের পাহাড়গুলো প্রায় ২০০ ফুট উঁচু। সূর্যের আলো খুব কম পৌঁছায় বলে এর ভেতরের পরিবেশ বেশ শীতল এবং রহস্যময়। এখানে গেলে মনে হবে যেন প্রকৃতির এক গোপন অভয়ারণ্যে প্রবেশ করেছেন। ভেলায় চড়ে চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করা যেন এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা।

দেবতাখুম যাওয়ার উপযুক্ত সময়:

দেবতাখুম ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হল শীতকাল। এই সময়ে বৃষ্টি কম থাকায় খুমের পানি স্বচ্ছ থাকে এবং চারপাশের পরিবেশও থাকে মনোরম। বর্ষাকালে খুমের পানি বেড়ে যাওয়ায় এখানে ভ্রমণ করা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ।

যেভাবে যাবেন:

দেবতাখুম যেতে হলে প্রথমে বান্দরবান জেলা সদরে আসতে হবে। ঢাকা থেকে বান্দরবান আসার জন্য বিভিন্ন পরিবহনের বাস রয়েছে। বান্দরবান শহর থেকে রোয়াংছড়ি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সিএনজি বা বাসে যাওয়া যায়। রোয়াংছড়ি থেকে কচ্ছপতলী আর্মি ক্যাম্প পর্যন্ত সিএনজি বা জিপে যাওয়া যায়। কচ্ছপতলী আর্মি ক্যাম্প থেকে শীলবাঁধা পাড়া পর্যন্ত হেঁটে যেতে হয়। শীলবাঁধা পাড়া থেকে দেবতাখুম পর্যন্ত ভেলায় করে যাওয়া যায়।

কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য:

  • দেবতাখুম ভ্রমণের আগে কচ্ছপতলী আর্মি ক্যাম্প থেকে অনুমতি নিতে হয়।
  • দেবতাখুম ভ্রমণের জন্য গাইড নেওয়া বাধ্যতামূলক।
  • দেবতাখুমে ভেলায় চড়ার সময় লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করা উচিত।
  • দেবতাখুমের আশেপাশে কোনো দোকান বা রেস্টুরেন্ট নেই, তাই প্রয়োজনীয় খাবার ও পানি সাথে নিতে হবে।

কিছু পরামর্শ:

  • দলবদ্ধভাবে দেবতাখুম ভ্রমণ করলে খরচ কিছুটা কমানো সম্ভব।
  • দেবতাখুমের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। তাই এখানে কোনো প্রকার ময়লা ফেলা থেকে বিরত থাকুন।
  • বর্ষাকালে দেবতাখুম ভ্রমণ করা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ, তাই এই সময়টাতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করুন।

দেবতাখুমের সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। নিজের চোখে না দেখলে এর আসল রূপ বোঝা যাবে না। তাই সুযোগ পেলে ঘুরে আসুন প্রকৃতির এই অপরূপ সৃষ্টি থেকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ