ডাকাত আখ্যা দিয়ে ছাত্র আন্দোলনের দুই কর্মীকে হত্যার অভিযোগ
সাংবাদিক জমির উদ্দিনের টাইমলাইন থেকে:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এক হৃদয়বিদারক ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ছাত্র আন্দোলনের দুই কর্মী নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেক। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের দাবি, সাবেক এমপি আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী নজরুল ইসলাম মানিকের নেতৃত্বে এই দুইজনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।
পিটিয়ে হত্যার ভিডিও দেখছিলাম। পিটানো অংশ নেওয়া চারজন ছিলেন হেলমেট পরিহিত। অল্প সময়ে তারা শক্ত লাঠি কীভাবে পেলেন। মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে মোটরসাইকেল করে দুজনকে দ্রুত সরে পড়তে দেখা যায়। পুলিশ অবশ্যই তদন্ত করছে। তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসল রহস্য।
অথচ হত্যার শিকার হওয়া তারা ছিলেন ছাত্রদের সংগ্রামী কণ্ঠস্বর, ছিলেন রাজপথের সাহসী সৈনিক। কিন্তু আজ সেই রাজপথই তাদের রক্তে রঞ্জিত হলো, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নির্মম শিকার হয়ে তারা চিরতরে নিথর হয়ে গেলেন।
ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও সাক্ষ্য দেয় তাদের সাহসী অবস্থানের। জুলাই অভ্যুত্থানের উত্তাল সময়ে যখন ছাত্রদের দাবি দমনের চেষ্টা চলছিল, তখন নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেক বুক চিতিয়ে রাজপথে দাঁড়িয়েছিলেন। পুলিশের সামনেই নিজের মোবাইলে সেলফি ভিডিও ধারণ করেছিলেন নেজাম। সে ভিডিওতে স্পষ্টভাবে দেখা যায়, তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছিলেন, ভয়কে জয় করেছিলেন। অথচ আজ তাদের লাশ পড়ে আছে রাজপথের এক কোণে—নিপীড়কের নির্মম আঘাতে ঝরে গেছে দুটি তাজা প্রাণ।
এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ফেসবুকে এইচ এম নাছির উজ্জামান রিয়াদ লিখেছেন, "নেজাম ও ছালেক পরিকল্পিত হত্যার শিকার। তারা ছাত্রদের জন্য লড়েছিলেন, ন্যায়বিচারের জন্য আওয়াজ তুলেছিলেন। এখন তাদের জন্য আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে। দ্রুত হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা হোক!"
এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে ক্ষমতার কদর্য চেহারা। নজরুল ইসলাম মানিক, যিনি ২০১৮ সালে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন, তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, তিনি এমপি নদভীর ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত। তার ছায়াতলে গড়ে উঠেছে এক ভয়ংকর দখলদার ও অপরাধীদের সিন্ডিকেট।
নেজাম ও ছালেকের হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে, সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো এখনও কতটা ভয়ংকর হতে পারে! কিন্তু ইতিহাস বলে, প্রতিটি রক্তের দাগ একদিন বিচার চায়, প্রতিটি অবিচারের জবাব সময় দিতে বাধ্য হয়।
ভিডিও :
0 মন্তব্যসমূহ