জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার ভাসানী চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ঘুরে নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়।
এর আগে, শিক্ষার্থীদের অনশনের মুখে পোষ্য কোটার বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতি বিভাগে পোষ্য কোটায় ভর্তি সীমিত করে ৪০টি আসনে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা পূর্বে ১৪৮ জন পর্যন্ত ছিল। এ ছাড়া, পূর্বে সন্তান, স্ত্রী, ভাই ও বোন এই কোটার আওতায় আসলেও নতুন নিয়মে কেবল চাকরিজীবীদের সন্তানরা এই সুবিধা পাবেন এবং এক ব্যক্তি শুধুমাত্র একজন সন্তানকে এ কোটা সুবিধা দিতে পারবেন। সেই সঙ্গে চাকরিজীবীরা যে বিভাগে কর্মরত, সেখানে তাদের পোষ্যরা আর ভর্তি হতে পারবে না।
কোটা সংস্কারের এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে সকাল থেকেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলনে নামে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের লাগানো ‘পোষ্য কোটা বাতিল চাই’ লেখা পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে, যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তীব্র বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা এখন সম্পূর্ণভাবে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আন নাফি বলেন, “আমরা নতুন বাংলাদেশে এই অযৌক্তিক কোটা দেখতে চাই না। এটি সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়, এবং আমরা চাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত হোক।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সৃষ্টি বলেন, “যে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের হুমকি দিতে পারে, তাদের আমরা ক্যাম্পাসে চাই না। প্রশাসন যদি পোষ্য কোটা বাতিল এবং যথাসময়ে জাহাঙ্গীরনগর কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন বাস্তবায়ন না করে, তাহলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
বিকেল ৪টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য উপাচার্য উপস্থিত হলে তিনি তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বিকেল ৪:৪৫) প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।
0 মন্তব্যসমূহ