কক্সবাজার অফিস:
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কক্সবাজারে কর্মরত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার বিদেশি কর্মীরা নিজ নিজ ভাষায় কবিতা আবৃত্তি করেছেন।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে ‘সার্ধশতকে একুশের দ্রোহ’ শীর্ষক ভিন্নধর্মী এক আয়োজনে তারা ভাষা দিবসে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন, যা পরে ইংরেজিতে অনুবাদ করে সবার কাছে তুলে ধরা হয়।
সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা অংশ নেন।
জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে তার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও মাতৃভাষার কথা মনে পড়ছে। এই প্রথম তিনি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের অভিজ্ঞতা অর্জন করলেন।
নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছেন, এটা খুব ভালো লাগছে।
ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন, যিনি বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে আছেন, বলেন মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়, অনেক আনন্দের।
কলম্বিয়ান নাগরিক ইসাবেল সুয়োরাজ বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে তার স্কুলজীবনের কথা মনে পড়ছে।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক এমএম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে। বিদেশি নাগরিকদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্ব পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা ও কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, তাদের বিদ্যালয়েই কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার স্থাপিত হয়েছিল। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত।
তিনি জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে কক্সবাজার হাই স্কুলের ছাত্ররা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন।
প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের সংগঠক শেখ আশিকুজ্জামান বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানসহ নানা কারণে কক্সবাজার এখন আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে হাজারের বেশি বিদেশি নাগরিক কাজ করেন, যা দেশের অন্য কোনো জেলায় নেই। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের মাধ্যমে এ শহরের আন্তর্জাতিক গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ