সকাল-বিকাল মামলা- হুমকি-ধমকির জীবন!
বিগত সরকারের মন্ত্রী ও আমলাদের দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করার কারণে বিগত সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, দ্রুত বিচার, মানহানিসহ ৫৩টি মামলায় আসামি করা হয়েছিল। দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় ২০১৮ সালে একবার ক্রসফায়ার দেওয়া চেষ্টা করেছিলো পুলিশ ও পুলিশের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম।
কারাগারে যেতে হয়েছিল ৯ বার। প্রায় বিভিন্ন সময়ে ৯ মাস কারাগারে থাকতে হয়েছে। এসব মামলার বেশিরভাগই করেছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, এমপি,পুলিশ কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের দোসরা।
আমার জানা মতে দেশের কোথাও কোন সাংবাদিকের নামে এত মামলা হয়েছে কিনা, আমার জানা নেই।
শুধু মামলাতেই সীমাবদ্ধ নয়, ৮০০ কোটি টাকা দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে আমার বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাঙচুরের অভিযোগ এনে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছিলেন ঠিকাদার।
এছাড়াও তদন্তের নামে গায়েবি প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন ময়মনসিংহের তৎকালীন পিবিআইয়ের এডিশনাল এসপি আবু বক্কর সিদ্দিক ও এসআই রুবেল।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বডিগার্ড এক ক্যাপ্টেনের ক্ষমতায় তার দুর্নীতিবাজ শাশুড়ির উদ্যোগে আমার ছবি কেটে বিভিন্ন ব্যানার তৈরি করে পোস্টারিং করে ময়মনসিংহ জেলা ও ত্রিশাল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক পোস্টার লাগিয়েছিলেন এবং কিছু শিক্ষার্থী দিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে ছিলেন। যে সমস্ত শিক্ষার্থী আমাকে নিয়ে বিক্ষোভ অংশগ্রহণ করেছিলেন অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পরিবার আত্মীয়-স্বজন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে রয়েছেন। এরই মধ্যে একটি গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে তাদের নাম ঠিকানা উঠে আসে।
আমার ছবি দিয়ে এখনও কিছু আওয়ামী লীগের দোসর খুব মজা লয়। তাদের সাথে যোগ দেয় দুর্নীতিবাজ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। তারাও একটু মজা পায়। বিভিন্ন সময় আমার ছবি কেটে কাটিং এর মাধ্যমে ফেক আইডি খুলে ব্যাপক অপপ্রচার করে। আমিও কোন প্রতিবাদ করতে চাই না কারন তারা যেহেতো প্রচার করতে চায় তাহলে আমি কেন বাঁধা দেবো? এতে করে অনেক সাংবাদিক ভাই/বোনসহ কিছু প্রতিপক্ষ মজা পেয়েছিলেন। আগেও দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলাম। এবারও যারা দুর্নীতি করবে, সরকারি টাকা আত্মসাৎ করবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাব। আমার ভাই বিএনপি রাজনীতি সাথে জড়িত থাকায় আমাকে বিভিন্ন সময় ছাত্রদলের ক্যাডার হিসেবে তকমা দিয়ে বারবার কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছিল। ২০১৯ সালে ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কয়েকটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল।
সেই আওয়ামী লীগের দোসররা আবার ৫ ই আগস্টের পর বিভিন্ন দপ্তরে প্রায় শতাধিক অভিযোগ দাখিল করেছিলেন। কিন্তু সঠিক নাম ঠিকানা দিয়ে অভিযোগ দেওয়ার সাহস এখনো হয়নি তাদের। বেনামীয় অভিযোগ দিলে আমার কিছু আসে যায় না।
গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে কতবার যে আয়না ঘর বা আমার লাশ গুম করার হুমকি পেয়েছি, তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। এরপরও আমি কখনো এসব নিয়ে উচ্চবাক্য করিনি বা কাউকে কিছু বুঝতে দিইনি। কারণ, আল্লাহ আমাকে এমনভাবে সৃষ্টি করেননি যে মৃত্যুকে ভয় করব। এজন্য আমি আল্লাহর কাছে হাজারও শোকরিয়া আদায় করি।
- লিখেছেন
খাইরুল আলম রফিক
সম্পাদক- প্রতিদিনের কাগজ
0 মন্তব্যসমূহ