নিরহ আব্দুর রশিদকে হত্যা ও সাংবাদিক নির্যাতনের অপরাধে ওসি মনজুরের বিরুদ্ধে দুই মামলা

 

ওসি মঞ্জুর ও সাংবাদিক মুন্না

কক্সবাজারে ওসির মঞ্জুরের বিরুদ্ধে হত্যা ও চাদাঁবাজির দুটি পৃথক মামলা
//সাংবাদিককে অপহরণ, নির্যাতন ও সাজানো মামলার অভিযোগ
//২০১৩ সালের হত্যা মামলাতেও অভিযুক্ত ওসি
//কক্সবাজারে ওসি মঞ্জুরের বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলা
//পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও চাঁদাদাবীর অভিযোগে ওসি সহ ৪ জনের  বিরুদ্ধে  মামলা
//গভীর রাতে সাংবাদিক'কে তুলে নিয়ে নির্যাতন
//পুলিশ বলছে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে তবে প্রমাণ দেখাতে পারেনি সাংবাদিকদের

কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া এবং তার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে এবং একটি পুরনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।

২৭ জানুয়ারি (সোমবার) কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মনছুর আলম মুন্না। অভিযোগে বলা হয়, ২৫ জানুয়ারির গভীর রাতে ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়ার নির্দেশে চকরিয়া থানার একদল পুলিশ কক্সবাজার শহরের দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কার্যালয় থেকে সাংবাদিক মুন্নাকে তুলে নিয়ে যায়।

পথে রামুর পানিরছড়া এলাকায় তাকে মারধর করা হয় এবং পরে থানায় নিয়ে আবার নির্যাতন করা হয়। এরপর দ্রুত বিচার আইনে চাঁদাবাজির একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২১ দিনের কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান।

বাদীর আইনজীবী সালাহ উদ্দীন আহমদ জানান, মামলার বাদী নিজেই ওসি এবং নিজেই রেকর্ডকারী কর্মকর্তা। এটি আইনবিরোধী এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ।

পুরনো হত্যা মামলার অভিযোগ:
২০১৩ সালের সাঈদীর রায়কে কেন্দ্র করে সংঘটিত একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত নিরহ আব্দুর রশিদের
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। মামলাটি ২৬ জানুয়ারি কক্সবাজারের ঈদগাঁও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করা হয়।

বাদী পক্ষের অভিযোগ, চকরিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে ওসি মনজুর ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছেন। পত্রিকায় এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিক মুন্নাকে অপহরণ ও নির্যাতন করেন।

ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলার বিষয়টি তদন্তাধীন। নিজে বাদী হয়ে মামলা রেকর্ড করার ব্যাপারে তিনি দাবি করেন, রেকর্ডকারী কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে থানার কোনো সদস্য মামলা রেকর্ড করতে পারেন।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ বলেন, আদালতে মামলা হয়েছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ জানান, কেউ অন্যায় করলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গনি বলেন, কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আকতার জাবেদ মামলাটি গ্রহণ করে তদন্ত করে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক ও তার আইনজীবী বিষয়টিকে আইনের অপব্যবহার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ