নিজস্ব প্রতিবেদক :-
কক্সবাজারের মহেশখালী মৈনাক পর্বতের চূড়ায় শ্রী আদিনাথ রাম সীতা মন্দিরের সংস্কার কাজ করতে গিয়ে ৪ যুবককে কারাগারে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) সকাল ৯ টার দিকে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে পুলিশ ও আদিনাথ মন্দির সংস্কার কমিটি নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে শ্রী শ্রী রাম সীতা মন্দির নির্মাণ ও মাঠের মাটি কাটার অভিযোগে চারজনকে আটক করে মহেশখালী থানা পুলিশ।
এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিনাশ্রমে এক মাসের জেল ও জরিমানা করা হয়েছে বলে জানা যায়।
আটককৃতরা হলেন ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের আদিনাথ ঠাকুরতলা গ্রামের বাসিন্দা প্রফুল্ল দে'র ছেলে শ্রী রাম সীতা মন্দির কমিটি'র সভাপতি প্রদীপ দে (৩৭),হরি দে'র ছেলে রতন দে (৩০),রিপন কান্তি দে (২৯) ও প্রনব দে(কালু)-(৩৭)।
সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাধনময় ভট্টাচার্য এর স্বাক্ষরিত অনুমোদনের প্রেক্ষিতে নির্মাণ হয় শ্রী রামসীতা মন্দির। তখন থেকেই শ্রী শ্রী আদিনাথ রামসীতা মন্দির এবং মন্দিরের দৈনন্দিন পূজা সুন্দর ও সুশৃঙ্খল ভাবে পরিচালনা হয়ে আসতেছে।
শ্রী শ্রী আদিনাথ রামসীতা সেবক সংঘ মন্দির সংস্কার করার উদ্যোগ নিলে ঘটে বিপত্তি।
এ নিয়ে আদিনাথ রামসীতা সেবক সংঘের একাধিক কর্মকর্তা'রা অভিযোগ করে জানান, শ্রী আদিনাথ রামসীতা মন্দিরের সংস্কার করার জন্য গেলে, ঠিক তখনই নব গঠিত সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির কিছু প্রতিনিধি বিভিন্ন ভাবে বাঁধা প্রদানের চেষ্টা চালায়। তাদের ভাষ্য মতে মন্দির করতে হলে নব গঠিত সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির অনুমতি নিতে হবে। সাবেক সভাপতির অনুমতি কাজ হবে না। শ্রী আদিনাথ মন্দিরস্থ মৈনাক পর্বতের চূড়ায় পর্যটন ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ হচ্ছিলো তখন কেন তারা গিয়ে বলেনি যে ওয়াচ টাওয়ার করতে হলে সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন?
কেন ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করতে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না আর শ্রী শ্রী আদিনাথ রামসীতা মন্দিরের সংস্কার করতেও অনুমতি নিতে হয়?
এসব বিষয়ে কথা-কাটাকাটি হলে এক পযার্য়ের আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে একটা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদের সনাতনী ভাইদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মহেশখালী স্রাইন কমিটির প্রতিনিধি ও কাউন্সিলর প্রণব কুমার দে জানান, ইউএনও এবং ওসি মহোদয়ের সাথে অসদাচরণ ও পাহাড় কাটার অভিযোগে তাদের জেল হয়েছে।
বিষয়টি নতুন পুরাতন কমিটি নিয়ে নয়। বিষয়টি হচ্ছে সভাপতি মহোদয় অনুমতি দেওয়ার আগে সীতাকুন্ড স্রাইন কমিটির মিটিংয়ে তুলতে হবে এবং সবার সিদ্ধান্তক্রমে তা রেজুলেশন আকারে সবার মতামতের ভিত্তিতে করতে হবে ।
তিনি তা না করে কাউকেও না জানিয়ে কোন মিটিং এর রেজুলেশন না করে এককভাবে অর্ডার দিতে পারেন না। এখানে দুটি বিষয় একটি হচ্ছে রাম সীতামন্দির আর একটি হচ্ছে পাহাড় কাটা।
সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির কোন অনুমতি না নিয়ে রাম সীতা মন্দিরের নাম দিয়ে পাহাড় কাটা হচ্ছে।
রাম সীতা মন্দিরের জন্য কোন অনুমতিও নেওয়া হয় নাই।
আগের সভাপতি মহোদয় অনুমতি দেওয়া হলো বলে একটা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন কিন্তু মন্দিরটি কোথায় হবে কিভাবে হবে কোন আলাপ আলোচনা না করে পাহাড়টা কেটে ফেলা হচ্ছে।
সমাজ যদি রাম সীতা মন্দির চায় তাহলে আদিনাথ মন্দির সংস্কার কমিটি ও সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির যৌথ উদ্যোগে তা করা হবে। কিন্তু এরা তো একটা ব্যবসা শুরু করেছে। ব্যবসা করার উদ্দেশ্যেই, একটা পাহাড় দখল করার উদ্দেশ্য নিয়ে রামসীতা মন্দিরের নাম দিয়ে সনাতন সমাজকে ধোকা দিচ্ছে।
দা নিয়ে আমার গলা কাটতে আসছে , পুলিশ রক্ষা করছে। তাই সনাতনী সমাজকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি।
এই বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীকি মারমা বলেন, মন্দির করার জন্য আমাদের কোন আপত্তি নাই। কিন্তু পাহাড় তো কাটতে পারবে না। পাহাড় কাটার অভিযোগে তাদের হাতেনাতে আটক করে জেল দেওয়া হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ